২০০৬ সালে যেদিন বক্তারনগর জমিদার বাড়ি আবিষ্কার করি

বারুয়াখালীতে প্রথম গিয়েছিলাম বড় ভাইয়ে বিয়ে উপলক্ষ্যে। মাঘের শীতের দিন, বিয়ের দুই দিন পর ফিরানি বা ঘুরানি কোনো একটা নাম সেদিনে গিয়েছিলাম। ভাবীদের বাড়ীর পাশে ইছামতি, পানি খুব কম। একটা নৌকা ব্যবস্থা করে পার হয়ে হেটে গিয়েছিলাম নতুন এলাকা “এক্সপ্লোর” করতে। মাঠ-ঘাটের উপর দিয়ে যেতে যেতে একটা উচু রাস্তা পাড় হয়েই অবাক হয়ে গেলাম। ঢেও খেলানো ছোট সবুজ ঘাসের মাঠ, তার উপর তাল গাছ আর পুকুর, গলফ মাঠের মত, বাংলার চিরাচরিত দৃশ্যের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম, চেখে লাগে। আর একটু এগিয়ে গেলেই দেখলাম জমিদার বাড়ির ভগ্নাবশেষ। অসাধারণ “আবিষ্কার”!

Continue reading “২০০৬ সালে যেদিন বক্তারনগর জমিদার বাড়ি আবিষ্কার করি”
২০০৬ সালে যেদিন বক্তারনগর জমিদার বাড়ি আবিষ্কার করি

ফিল্মি ফ্রেমের গল্প

বড় মামা আমাকে একটা এনালগ ক্যামেরা দিয়েছিলেন। সেটি আমার প্রথম ক্যামেরা। তখন আমি ইন্টারের ছাত্র। সেই পয়েন্ট এন্ড শুট ক্যামেরা নিয়ে ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফার হয়ে যেতে চাচ্ছিলাম!! ফটোগ্রাফি সমন্ধে কত কম জানতাম! ছবি তোলা তখন বেশ খরুচে ব্যাপার ছিল। একটা রিলের দাম ছিল ১১০ টাকা, ডেভেলপ করতে ২৫ টাকা, থ্রিআর সাইজে প্রিন্ট করতে ৫ বা সাড়ে ৫ টাকা। এক রিলে মোটামুটি ৪০ টা ফিল্ম থাকত। এতো খরচের পরও বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু তার প্রায় সব ফিল্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক ছবি স্ক্যান করেছিলাম, এই হার্ডডিস্ক ওই হার্ডডিস্ক করতে করতে সেগুলোরও অনেক ছবি হারিয়ে হয়ে গিয়েছে।

অনলাইনে শেয়ার করা থাকলে ছবিগুলো হারাবে না, ছবির তোলার স্মৃতিও এক সময় হয়তো হারিয়ে যাবে। তখন এই পোস্ট পড়ে সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে পারব। আমার পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যরাও দেখতে পারবে।

Continue reading “ফিল্মি ফ্রেমের গল্প”
ফিল্মি ফ্রেমের গল্প

বিজয়পাড়ার তস্কর বিত্তান্ত

বিজয়পাড়া গ্রামটা একটু বড়, এতো বড় যে একে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্বে ভাগ করতে হয়েছে। অনেক কাল আগে এই গ্রামের এক বাড়িতে ভূমিহীন এক পরিবার আশ্রয় নেয়। সত্যি বলতে এমন তো অনেক গ্রাম আছে, এমন ভূমিহীন অনেক পরিবারও আছে। আর যেহেতু ভূমিহীন তাই অন্যের বাড়িতেই আশ্রয় নিতেই হয় যদি নিজের বাড়ি কেনার অর্থ না থাকে। এই পর্যন্ত খুবই টিপিক্যাল একটা পরিবার, কিন্তু আগামী কয়েক দশকে তারা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তবে তাদের গল্প একেবারে অন্যন্য না, পুরো দেশ খুঁজলে এমন আরও পাওয়া যাবে। মূলত সেই সব পরিবারের প্রতিনিধত্বমূলক এক গল্প এখন বলতে যাচ্ছি। যে গল্প আপনাদের আশেপাশেও রচিত হতে পারে, এই গল্প থেকে শিক্ষাও নিতে পারেন।

Continue reading “বিজয়পাড়ার তস্কর বিত্তান্ত”
বিজয়পাড়ার তস্কর বিত্তান্ত

সাদাপুর: একটি হারানো গ্রাম

পুরোনো দিনের ছবি

ছবি ১:

আমার নানা বাড়ীর সামনে, বামপাশে মোল্লা বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা দেখা যাচ্ছে, বিপরীত দিকে নানাবাড়ির প্রবেশপথ। আর রাস্তার উপর নবাবগঞ্জের পুরোনো বাস। এই সার্ভিসটি এখন আর নেই।

১৯ জানুয়ারি, ২০০৬

Continue reading “সাদাপুর: একটি হারানো গ্রাম”
সাদাপুর: একটি হারানো গ্রাম

স্মৃতিতে বিশ্বকাপ ফুটবল

আমার প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল দেখা ১৯৯৪ সালে। সেই সময় খেলা বুঝতাম না, দেখতামও না। তার আগে ফুটবলের সাথে সম্পর্ক বলতে আব্বার দেয়া সাদা-কমলা ফুটবল, যার গায়ে খুব ছোট ছোট ফুটকি ছিল। এখনও স্মৃতিতে স্পষ্ট দেখতে পাই বলটাকে। ওই বলের সুবাদে এলাকায় ফুটবল খেলায় সুযোগ পেতাম। সেটাও “দুধভাত”, গোল কিপার পদে।

তখন সবার মুখে মুখে শুনতাম ম্যারাডোনার কথা। একদিন রাতে বাড়ীর সবাই বসল খেলা দেখতে, ম্যারাডোনা খেলবে। দাদীর ঘরে টিভি, পুরো মেঝে ও চৌকি ভর্তি দর্শক। ছোট কাকা হাত দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিলেন, “ওই যে ম্যারাডোনা”। ম্যারাডোনাকে দেখলাম কোনো বাধাই মানে না, পড়ে গেলেও স্প্রিঙের মত লাফ দিয়ে উঠে। ওটা ছিল প্রথম খেলা দেখা।

Continue reading “স্মৃতিতে বিশ্বকাপ ফুটবল”
স্মৃতিতে বিশ্বকাপ ফুটবল

“ইহুদী জাতির ইতিহাস” পূণর্পাঠ

আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদের “ইহুদী জাতির ইতিহাস” বইটি বেরুনোর পরপরই পড়েছি আরও দুই বছরের বেশি আগে। আর এর অর্ধেকটা অনলাইনে পড়েছি আরও আগে। এতো দিন পরে বইটির রিভিউ লিখব তেমন ইচ্ছে ছিল না। ইহুদি ধর্মের পেছনের কথা সহজভাবে জানার একটা সুখপাঠ্য বই। ইহুদিদের ইতিহাস লিখতে গিয়ে এমন করে ন্যারেটরের ভূমিকা অনেকেই ধরে রাখতে পারেন না, বৃহৎ পরিসরে লেখা “ইজরায়েলের পূত্রগণ”এর লেখক পারেন নি। তারপরও বইটির আমি কিছু প্রসংশা ও কিছু সমালোচনাও করতে পারি। তার আগে বলে নিই এই রিভিউ লেখার পেছনের কথা, যেটি লেখার কথা ছিল না:

Continue reading ““ইহুদী জাতির ইতিহাস” পূণর্পাঠ”
“ইহুদী জাতির ইতিহাস” পূণর্পাঠ

জন্ম নিবন্ধন থেকে পাসপোর্ট, বাঙালির হরর অভিজ্ঞতা

পাসপোর্ট করতে গিয়ে অনেকের হয়রানির অভিজ্ঞতা শুনেছি। কিন্তু আমার নিজের পাসপোর্ট করেছি নির্ঝঞ্ঝাটে, তাই পাসপোর্ট সমন্ধে ভাল ধারণা ছিল। পাসপোর্ট নির্ঝাঞ্ঝাটে হয়, যদি আগের সরকারী নিবন্ধনগুলতে সমস্যা না থাকে (এনআইডি/জন্ম নিবন্ধনে তথ্য বা বানান ভুল নেই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না)। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচন কমিশনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, স্কুলের কেরানিরা মিলে যে ভুলের জাল বিছিয়ে রেখেছে সেই জাল ছিন্ন করে একজন বাংলাদেশীর এগুনোর পথটা কঠিন হয়ে উঠেছে। এর সাথে আছে কিছু দিন পর পর সরকারী নিয়মের পরিবর্তন।

আমার বোন ও ভাগনের পাসপোর্টের এনরুলমেন্ট করেছি ২০২১ সালের অক্টোবরে ১৩ তারিখে। প্রায় এক মাস পর ৯ নভেম্বরে বোনেরটা যাত্রাবাড়ী অফিসে রিওয়ার্কের জন্য পাঠানো হয়। এটা একেবারেই আমাদের দুর্ভাগ্য! সময় মত পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছিল। কিন্তু এর পর আর আগাচ্ছিল না। তখন ভাগনের টা আটকে আছে ব্যাকএন্ড ভেরিফিকেশনে। রিওয়ার্ক আরেকটা অভিশাপ, প্রথমে গিয়ে জানতে হয় কী সমস্যা হয়েছে, কোনো কাগজে সমস্যা থাকলে সেটি ঠিক করে আবার যেতে হয়। আমাদের সৌভাগ্য এক ঘনিষ্ট লোকের সহায়তায় জানতে পারি কী সমস্যা, তাই দুই দিন যেতে হয় নি।

Continue reading “জন্ম নিবন্ধন থেকে পাসপোর্ট, বাঙালির হরর অভিজ্ঞতা”
জন্ম নিবন্ধন থেকে পাসপোর্ট, বাঙালির হরর অভিজ্ঞতা

করোনায় দিনগুলি

এই দুই হাজার বাইশ সালের মার্চে এসে করোনা প্রভাবিত দিনগুলকে একটু দূরের মনে হয় যদিও মাত্র কয়েকদিন আগে একটা ঢেও গেল। সেই সময়টাকে কেমন যেন একটু রোমাঞ্চকর লাগে। কারো পাশ দিয়ে হেটে যাবার সময় মনে হত এই বুঝি করোনাভাইরাস ঢুকে গেল নাকে। কোনো কিছু স্পর্ষ করলেই স্যানিটাইজার দিয়ে হাত মুছা, বাসায় ফিরেই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, বাজারে গেলে দূরে দাড়িয়ে কেনা। এসব অবশ্য একটু পরের দিকে, প্রথমে তো বাড়ী থেকে বেরুনোই নেই।

করোনার সেই আতংকের দিনগুলোতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ বিপদগ্রস্থ হলেও আমি একটু সুবিধাভোগী ছিলাম। তাই মাঝে মাঝে সেই সময়টাকে সুখস্মৃতি হিসেবে স্মরণ করি। এর মানে এই না যে অন্যের দুরবস্থার কোনো সুবিধা আমি নিয়েছি বা অন্যের কষ্টে আমি ব্যাথিত নই। আমিও সেই সময় ব্যাপক পরিমাণে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি, বেতন কমে গিয়েছিল, তার উপরে অফিস থেকে নেয়া একা ঋণ ছিল, তার টাকা কাটত, এ কারণে বেতন পেয়েছি বেশ কম; বাড়ীতে বসেও ঢাকার বাসার ভাড়া গুণতে হয়েছে। আর আমার ভাল লাগাটা ছিল দীর্ঘ একটা সময় বাড়ীতে পরিবারের সাথে থাকতে পেরেছি, বাচ্চার কাছে থেকেছি, বই পড়ার সময় পেয়েছি। আর্থিক দিকে সেই সময়টা আমার জন্যেও খারাপ ছিল, তখন যারা আমার চে’ খারাপ ছিল তারা এখন আমার চে’ বেশ ভাল আছে, বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, যে কোনো ছুতোয় দাম বেশি রাখছে; তারা কি আমার জন্য ব্যাথিত হয়? যখন একটু ভাল লাগার সময় আসবে সেটাকে উপভোগ না করার বা অস্বীকার করার মধ্যে কোনো মহত্ব নেই।

Continue reading “করোনায় দিনগুলি”
করোনায় দিনগুলি