করোনায় দিনগুলি

এই দুই হাজার বাইশ সালের মার্চে এসে করোনা প্রভাবিত দিনগুলকে একটু দূরের মনে হয় যদিও মাত্র কয়েকদিন আগে একটা ঢেও গেল। সেই সময়টাকে কেমন যেন একটু রোমাঞ্চকর লাগে। কারো পাশ দিয়ে হেটে যাবার সময় মনে হত এই বুঝি করোনাভাইরাস ঢুকে গেল নাকে। কোনো কিছু স্পর্ষ করলেই স্যানিটাইজার দিয়ে হাত মুছা, বাসায় ফিরেই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, বাজারে গেলে দূরে দাড়িয়ে কেনা। এসব অবশ্য একটু পরের দিকে, প্রথমে তো বাড়ী থেকে বেরুনোই নেই।

করোনার সেই আতংকের দিনগুলোতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ বিপদগ্রস্থ হলেও আমি একটু সুবিধাভোগী ছিলাম। তাই মাঝে মাঝে সেই সময়টাকে সুখস্মৃতি হিসেবে স্মরণ করি। এর মানে এই না যে অন্যের দুরবস্থার কোনো সুবিধা আমি নিয়েছি বা অন্যের কষ্টে আমি ব্যাথিত নই। আমিও সেই সময় ব্যাপক পরিমাণে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি, বেতন কমে গিয়েছিল, তার উপরে অফিস থেকে নেয়া একা ঋণ ছিল, তার টাকা কাটত, এ কারণে বেতন পেয়েছি বেশ কম; বাড়ীতে বসেও ঢাকার বাসার ভাড়া গুণতে হয়েছে। আর আমার ভাল লাগাটা ছিল দীর্ঘ একটা সময় বাড়ীতে পরিবারের সাথে থাকতে পেরেছি, বাচ্চার কাছে থেকেছি, বই পড়ার সময় পেয়েছি। আর্থিক দিকে সেই সময়টা আমার জন্যেও খারাপ ছিল, তখন যারা আমার চে’ খারাপ ছিল তারা এখন আমার চে’ বেশ ভাল আছে, বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, যে কোনো ছুতোয় দাম বেশি রাখছে; তারা কি আমার জন্য ব্যাথিত হয়? যখন একটু ভাল লাগার সময় আসবে সেটাকে উপভোগ না করার বা অস্বীকার করার মধ্যে কোনো মহত্ব নেই।

Continue reading “করোনায় দিনগুলি”
করোনায় দিনগুলি